Books Pointer Logoবুকস পয়েন্টার
বই লিখুন
No results found
  • হোম
মহাশ্বেতা দেবী

@লেখক

মহাশ্বেতা দেবীর জীবনী

মহাশ্বেতা দেবী (১৪ জানুয়ারি ১৯২৬ – ২৮ জুলাই ২০১৬) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও মানবাধিকার আন্দোলনকর্মী। তার লেখায় উঠে এসেছে আদিবাসী, দলিত এবং প্রান্তিক মানুষের সংগ্রাম ও সামাজিক বৈষম্যের নির্মম বাস্তবতা। মহাশ্বেতা দেবী উপন্যাস, গল্প, প্রবন্ধ ও সামাজিক কার্যকলাপের জন্য আজও তিনি স্মরণীয়।


প্রারম্ভিক জীবন

মহাশ্বেতা দেবী কে ছিলেন জানতে হলে প্রথমেই জানা জরুরি তার পারিবারিক ও শৈশবের প্রেক্ষাপট। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ব্রিটিশ ভারতের ঢাকা শহরে। তার পিতা মণীশ ঘটক ছিলেন কল্লোল যুগের কবি এবং ‘যুবনাশ্ব’ ছদ্মনামে লেখালেখি করতেন। তার চাচা ছিলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক ঘটক। শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী থেকে স্নাতক এবং পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

সাহিত্যজীবন

মহাশ্বেতা দেবী রচনা সমগ্র রাজনৈতিক ও মানবিক বোধে গভীরভাবে সিক্ত। তিনি রচনা করেছেন ১০০টিরও বেশি উপন্যাস এবং ২০টির বেশি ছোটগল্প সংকলন। তার প্রথম উপন্যাস ছিল ‘ঝাঁসির রানি’ (১৯৫৬), যা ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাই-এর জীবন অবলম্বনে লেখা। সাহিত্যিক হিসেবে তিনি ছিলেন সামাজিক দায়বদ্ধ, যিনি সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন ক্ষমতাবানদের।


মহাশ্বেতা দেবীর উপন্যাস সমগ্র

মহাশ্বেতা দেবীর উপন্যাসগুলিতে মূলত আদিবাসী, দলিত ও নিম্নবর্গের মানুষের সংগ্রাম উঠে এসেছে। তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলির মধ্যে রয়েছে:

হাজার চুরাশির মা(নকশাল আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত), অরণ্যের অধিকার, চোট্টি মুণ্ডা এবং তার তীর, মাস্টার সায়েব, অগ্নিগর্ভ, জঙ্গল মহল, স্ট্যানলে, দ্রৌপদী, গিরিবালা, বিষধর সাপ, পরী, সুলতানা বিবিসানার স্বপ্ন

তাঁর গল্প সংকলনের মধ্যে "নষ্টচন্দ্রের গল্প", "অগ্নিগর্ভ" এবং "বিষধর সাপ ও অন্যান্য গল্প" বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

মহাশ্বেতা দেবী গল্প সমগ্র ও অনুবাদিত সংকলন — Imaginary Maps,Mother of 1084,Rudali, From Fiction to Performance,The Why Why Girl, The Old Woman, এবং The Breast Stories-এর মতো তাঁর রচনাগুলি আন্তর্জাতিক সাহিত্য অঙ্গনে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।


মহাশ্বেতা দেবী রচনা সমগ্র ও প্রবন্ধ

তিনি শুধু কথাসাহিত্য নয়, প্রবন্ধ ও গবেষণাধর্মী রচনায়ও সক্রিয় ছিলেন। তাঁর কিছু গুরুত্বপূর্ণ রচনা:

"বীরসা মুণ্ডা ও তাঁর উলগুলান" (আদিবাসী বিদ্রোহ নিয়ে ঐতিহাসিক গবেষণা)

"ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি" (সামাজিক ভাষ্য)

"আমার কাজ, আমার জীবন" (আত্মজীবনীমূলক রচনা)


মহাশ্বেতা দেবী সামাজিক আন্দোলন

মহাশ্বেতা দেবী জীবনী-র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ তার সামাজিক আন্দোলন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ের লোধা, শবর প্রভৃতি উপজাতিদের অধিকার আদায়ে নিরলস লড়াই করেছেন। বিরসা মুন্ডা-কে নিয়ে লেখা তার ‘অরণ্যের অধিকার’ উপন্যাস আদিবাসী আন্দোলনের এক মহৎ দলিল।

তিনি সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলন এবং শান্তিনিকেতনের বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে সোচ্চার হন। শিল্পায়নের নামে কৃষিজমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করে তৎকালীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে গণজাগরণে নেতৃত্ব দেন।

কর্মজীবন

১৯৬৪ সালে তিনি বিজয়গড় কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন এবং পাশাপাশি লেখালেখি ও সাংবাদিকতাও চালিয়ে যান। তিনি বলতেন—

“আমার লেখার উৎস সেই মানুষরা, যাদের পদদলিত করা হয় অথচ যারা কখনও হার মানে না।”

তার রচনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো দলিত, নারী ও প্রান্তিক জনজাতির জীবনসংগ্রামকে সাহিত্যিক ভাষায় রূপ দেওয়া।

পুরস্কার ও সম্মান

মহাশ্বেতা দেবী বই ও লেখালেখির জন্য তিনি বহু সম্মান অর্জন করেন:

সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার (বাংলা)

জ্ঞানপীঠ পুরস্কার

র‍্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার

পদ্মশ্রী ও পদ্মবিভূষণ

বঙ্গবিভূষণ (পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান)

ব্যক্তিগত জীবন

১৯৪৭ সালে তিনি নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্যকে বিয়ে করেন এবং তাদের পুত্র নবারুণ ভট্টাচার্য পরবর্তীকালে সাহিত্যিক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তার জীবনে ছিল নানা ঘাত-প্রতিঘাত—ডাকঘরের চাকরি, সাবান বিক্রি, নিরক্ষরদের জন্য চিঠি লেখা থেকে শুরু করে সাহিত্যজগতে প্রতিষ্ঠা লাভ, যা তার মহাশ্বেতা দেবী জীবনী-কে আরও বর্ণময় করে তোলে।

মৃত্যু

২০১৬ সালের ২৮ জুলাই তিনি কলকাতার বেল ভিউ ক্লিনিকে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুতে সমগ্র সাহিত্যজগতে শোকের ছায়া নেমে আসে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোকবার্তা জানান।


৮৮

বার পড়া হয়েছে

২৪

বইসমগ্র

বইসমূহ
উপন্যাস
কিশোর সাহিত্য
ছোট গল্প
থ্রীলার