@লেখক
প্রেমেন্দ্র মিত্র জীবনী ও সাহিত্যকর্ম | প্রেমেন্দ্র মিত্র রচনা সমগ্র
প্রেমেন্দ্র মিত্র (৪ সেপ্টেম্বর ১৯০৪ – ৩ মে ১৯৮৮) ছিলেন কল্লোল যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি সাহিত্যিক, যিনি কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, কল্পবিজ্ঞান ও চলচ্চিত্র—সবক্ষেত্রে তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। জন্ম বারাণসীতে হলেও তার পৈতৃক নিবাস ছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার রাজপুরে। প্রেমেন্দ্র মিত্রের ছদ্মনাম নিয়ে পাঠকের কৌতূহল থাকলেও তিনি মূলত নিজের নামেই সাহিত্য রচনা করতেন। মাতৃহীন শৈশব ও বহুবিধ জীবন অভিজ্ঞতা তার লেখায় বিশেষ ছাপ রেখেছে।
প্রেমেন্দ্র মিত্রের ছোট গল্প ও বিষয়বস্তু
প্রেমেন্দ্র মিত্রের ছোট গল্প সমগ্র বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। ‘শুধু কেরানি’, ‘গোপনচারিণী’, ‘পঞ্চশর’, ‘পুতুল ও প্রতিমা’, ‘অফুরন্ত’, ‘মৃত্তিকা’ প্রভৃতি গল্পে মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মানুষের জীবনসংগ্রাম, আবেগ ও মনস্তত্ত্বের জটিলতা ফুটে উঠেছে। প্রেমেন্দ্র মিত্রের ছোট গল্পের বিষয়বস্তু মূলত সমাজ, সম্পর্ক, শহরজীবনের নিঃসঙ্গতা ও কল্পনা।
প্রেমেন্দ্র মিত্রের কাব্যগ্রন্থ ও কবিতা
তার কবিতার মূল বৈশিষ্ট্য ছিল বৈপ্লবিক চেতনা ও মানবিক আবেগ। প্রেমেন্দ্র মিত্রের কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে: প্রথমা, ফেরারী ফৌজ, হরিণ চিতা চিল, সাগর থেকে ফেরা, সম্রাট, কখনো মেঘ,অমি কবি কামারের ,ফ্যান ইত্যাদি। প্রেমেন্দ্র মিত্রের প্রেমের কবিতা আবেগ ও সূক্ষ্ম মনস্তত্ত্বের প্রকাশে অনন্য।
প্রেমেন্দ্র মিত্রের উপন্যাস: পিঁপড়ে পুরাণ, পাতালে পাঁচ বছর, ময়দানবের দ্বীপ, শুক্রে যারা গিয়েছিল, মনুদ্বাদশ, সূর্য যেখানে নীল
ঘনাদা চরিত্র
ঘনাদা চরিত্রটি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। ৭২ নম্বর বনমালী নস্কর লেনের সেই মেসবাড়ির সর্বজ্ঞানী গল্পবাগীশ ঘনশ্যাম দাস এখনও সমান জনপ্রিয়। পরাশর বর্মা, মামাবাবু, মেজকর্তার মতো চরিত্রগুলো প্রেমেন্দ্র মিত্রের গল্প ও উপন্যাসে কিশোর পাঠকদের প্রিয় হয়ে উঠেছে।
প্রেমেন্দ্র মিত্রের কল্পবিজ্ঞান সাহিত্য
বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের সূচনাকারী হিসেবে প্রেমেন্দ্র মিত্র রচনা সমগ্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ‘পিঁপড়ে পুরাণ’, ‘ময়দানবের দ্বীপ’, ‘ড্র্যাগনের নিঃশ্বাস’, ‘মনুদ্বাদশ’, ‘শুক্রে যারা গিয়েছিল’ প্রভৃতি গল্পে তিনি বিজ্ঞানের কল্পনা ও সাহিত্যরস একসঙ্গে মিশিয়েছেন।
চলচ্চিত্র ও চিত্রনির্মাণ
প্রেমেন্দ্র মিত্র ছবি পরিচালনাতেও দক্ষ ছিলেন। ‘হানাবাড়ী’, ‘কুয়াশা’, ‘পথ বেঁধে দিল’, ‘চুপি চুপি আসে’ প্রভৃতি চলচ্চিত্রে তিনি পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার হিসেবে কাজ করেছেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা
তার সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি রবীন্দ্র পুরস্কার, সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার, পদ্মশ্রীসহ নানা সম্মানে ভূষিত হন।
মৃত্যুর পরিণতি
১৯৮৮ সালের ৩ মে, কলকাতায় পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি পরলোকগমন করেন। মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত তিনি সৃষ্টিশীল ছিলেন।
বার পড়া হয়েছে
বইসমগ্র