@লেখক
বাংলা সাহিত্য এবং আইনজগতের ইতিহাসে অতুলচন্দ্র গুপ্ত একটি বিশিষ্ট নাম। তিনি ছিলেন একজন প্রতিভাধর গদ্য সাহিত্যিক, প্রাজ্ঞ আইনজীবী এবং একনিষ্ঠ কংগ্রেস সদস্য। তাঁর কর্মজীবনের বিস্তৃতি যেমন ছিল সাহিত্যে, তেমনি ছিল আইন ও শিক্ষাক্ষেত্রেও।
অতুলচন্দ্র গুপ্তের জন্ম টাঙ্গাইল জেলার বিল্লাইক গ্রামে, পিতা উমেশচন্দ্র গুপ্ত ছিলেন একজন আইনজীবী। বাবার কর্মসূত্রে তাঁদের পরিবার রংপুরে বসবাস শুরু করে। অতুলচন্দ্রের শৈশব ও প্রাথমিক শিক্ষা রংপুরেই সম্পন্ন হয়।
তিনি ১৯০১ সালে রংপুর জেলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা পাশ করেন। পরে ভর্তি হন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে, যেখানে তিনি ইংরেজি ও দর্শনশাস্ত্রে অনার্সসহ বি.এ (১৯০৪) এবং এম.এ (১৯০৬) পাশ করেন। এরপর ১৯০৭ সালে তিনি বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন।
ছাত্রজীবনেই তিনি অংশগ্রহণ করেন ‘কার্লাইল সার্কুলার-বিরোধী আন্দোলনে’ (১৯০৫)।
শিক্ষা শেষে কিছুদিন তিনি শিক্ষকতা করেন রংপুর জাতীয় বিদ্যালয়ে। এরপর ১৯১৪ সালে আইন ব্যবসায় প্রবেশ করেন এবং পরে কলকাতা হাইকোর্টে কাজ শুরু করেন।
১৯১৮ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন, যেখানে তিনি রোমান ল ও জুরিসপ্রুডেন্স পড়াতেন। সেই বছরেই তিনি লিখেছিলেন গবেষণামূলক প্রবন্ধ "Trading with the Enemy", যার জন্য তিনি পেয়েছিলেন ‘অনাথনাথ দেব পুরস্কার’।
১৯২৮ সালে তিনি অধ্যাপনা ত্যাগ করে পূর্ণাঙ্গ আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবনে ফিরে যান এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন ভারতবর্ষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে।
অতুলচন্দ্র গুপ্ত সাহিত্যিক হিসেবে মূলত সমাজ, শিক্ষা ও নৈতিকতা বিষয়ক গদ্য লেখার মাধ্যমে পাঠকের মনে ছাপ ফেলেছিলেন। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ রচনাগুলো হলো:
এই রচনাগুলো সমাজচিন্তাধারায় নতুন মাত্রা যোগ করেছিল এবং বাংলা গদ্য সাহিত্যের জগতে তাঁকে স্থায়ী আসন দিয়েছিল।
অতুলচন্দ্র গুপ্ত ছিলেন এমন এক ব্যক্তিত্ব, যিনি সাহিত্য ও আইনের মধ্যবর্তী সেতুবন্ধন তৈরি করেছিলেন। তাঁর জীবনজুড়ে ছিল শিক্ষার প্রতি অনুরাগ, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং দেশের প্রতি ভালোবাসা। সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে তিনি গদ্যরসিক লেখক, আর আইনাঙ্গনে তিনি ছিলেন বিশ্লেষণধর্মী এক চিন্তক।
বার পড়া হয়েছে
বইসমগ্র