Books Pointer Logoবুকস পয়েন্টার
বই লিখুন
No results found
  • হোম
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত

@লেখক


অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত (১৯শে সেপ্টেম্বর ১৯০৩ – ২৯শে জানুয়ারি ১৯৭৬) বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, জীবনীকার এবং সম্পাদক। রবীন্দ্রনাথ ও শরৎচন্দ্রের পর কল্লোল যুগের প্রথিতযশা সাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। তাঁর রচনাশৈলী, সাহিত্যভাবনা এবং সমাজমনস্কতা বাংলা সাহিত্যে এক নতুন মোড় এনে দেয়।


প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত জন্মগ্রহণ করেন নোয়াখালী শহরে, তবে তাঁর আদি নিবাস ছিল বর্তমান বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার এক গ্রামে। তাঁর পিতা রাজকুমার সেনগুপ্ত ছিলেন আদালতের আইনজীবী। বাবার মৃত্যুর পর তিনি কলকাতায় চলে যান ও সাউথ সাবার্বান স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, এরপর আশুতোষ কলেজ থেকে আইএ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্সসহ বিএ এবং এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে বি.এল ডিগ্রিও লাভ করেন।


কর্মজীবন

১৯২৫ সালে তিনি বিখ্যাত সাহিত্য পত্রিকা কল্লোল-এর সম্পাদনার দায়িত্ব নেন এবং পরবর্তীতে বিচিত্রা পত্রিকাতেও কাজ করেন। বিচার বিভাগের বিভিন্ন পদে কর্মরত থেকে ১৯৬০ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। কর্মজীবনে ঘুরে বেড়িয়েছেন বাংলাদেশের নানা প্রান্তে, যার অভিজ্ঞতা তার সাহিত্যে প্রতিফলিত হয়েছে।


সাহিত্যকর্ম ও সাহিত্যশৈলী

অচিন্ত্যকুমারের সাহিত্যজীবন শুরু হয় ১৯২১ সালে ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় নীহারিকা দেবী ছদ্মনামে কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে। পরে ‘বেদে’ উপন্যাসের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রশংসা অর্জন করেন। তার উপন্যাসগুলিতে বাঙালি সমাজের অন্তর্দ্বন্দ্ব, সংস্কার ও পরিবর্তন স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। প্রথম কদমফুল, কাকজ্যোৎস্না, প্রাচীর ও প্রান্তর তাঁর বিখ্যাত উপন্যাসগুলোর মধ্যে অন্যতম।


তিনি ছিলেন একজন শক্তিশালী ছোটগল্পকার। যেমন: “অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত ছোটগল্প” বলতে গেলে ‘টুটা-ফুটা’, ‘অকাল বসন্ত’, ‘হাড়ি মুচি ডোম’ প্রভৃতি গল্প উল্লেখযোগ্য। তাঁর গল্পে মানুষের অন্তরজগত, যন্ত্রণা, আবেগ ও বাস্তবতার সংমিশ্রণ দেখা যায়।

তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে:

অমাবস্যা (১৯৩০)

আমরা (১৯৩৩)

আজন্মসুরভী (১৯৫১–৫২)

পূর্ব-পশ্চিম (১৯৬৯)

প্রসঙ্গত, "অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত কবিতা ছন্নছাড়া" ও "অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত কবিতা উদ্বাস্তু" তাঁর পাঠকপ্রিয় ও রাজনৈতিক চেতনার গভীরতম প্রতিফলন।

জীবনী ও স্মৃতিচারণ

অচিন্ত্যকুমার ছিলেন একজন সুনিপুণ জীবনীকার। পরমপুরুষ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ, বীরেশ্বর বিবেকানন্দ, পরমাপ্রকৃতি শ্রী সারদামণি প্রভৃতি জীবনীর মাধ্যমে তিনি ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক জীবনের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

স্মৃতিচারণমূলক রচনাগুলির মধ্যে ‘কল্লোল যুগ’ বইটি বাংলা সাহিত্য ইতিহাসের মূল্যবান দলিল হিসেবে বিবেচিত।

ছদ্মনাম

তিনি তাঁর লেখালেখির শুরুর দিকে ‘নীহারিকা দেবী’ ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন, যা “অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত ছদ্মনাম” সম্পর্কিত আলোচনায় বারবার উঠে আসে।

পুরস্কার ও সম্মাননা

তিনি ১৯৭৫ সালে জগত্তারিণী পুরস্কার, রবীন্দ্র পুরস্কার ও শরৎচন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য।


মৃত্যু

১৯৭৬ সালের ২৯ জানুয়ারি কলকাতায় অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত পরলোকগমন করেন। কিন্তু তাঁর সাহিত্যকীর্তি আজও পাঠক-হৃদয়ে সমানভাবে জাগ্রত।


৭

বার পড়া হয়েছে

৩

বইসমগ্র